কমন মিসটেইকস ইন মুসলিমস এক্টিভিটিস। ইসলামিক শর্ট স্টোরি বাংলা ৮

নামাজের জামাতে দৌড়ে অংশগ্রহণ করা!

ইসলাম শব্দের অর্থ হচ্ছে ‘শান্তি’। নামে যেমন শান্তি ইসলাম ধর্মও তেমন শান্তির। রাহাজানি, সন্ত্রাস বা হাহাকার কিছুরই ঠাই নেই সর্বোত্তম এই জীবনব্যবস্থায়। এমনকি তাড়াহুড়া বা অস্থিরতা অবলম্বন করে কোন ইবাদত করাও ইসলাম ধর্মে অনুমোদিত নয়।

নামাজের জামাতে উপস্থিত হতে একটু দেরি হলে অনেকেই দৌড়াদৌড়ি বা অস্থিরতা শুরু করি। অথচ, সালাত তৃপ্তির ইবাদাত। অস্থিরতার কোন সুযোগ নেই। শান্তভাবে সালাতে শরীক হওয়াই শ্রেয়। রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এরকম কাজ করাকে প্রকাশ্য নিষেধ করেছেন। 

হজরত আবু কাতাদা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বর্ণনা করেন, ‘একবার আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সঙ্গে নামাজ পড়ছিলাম, নামাজরত অবস্থায় তিনি লোকের ছুটাছুটির শব্দ অনুভব করলেন। নামাজ শেষে জিজ্ঞেস করলেন, “তোমরা কি করছিলে?” তারা আরজ করল, ‘আমরা নামাজের জন্য তাড়াতাড়ি আসছিলাম। আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, “এরূপ কখনো করো না। শান্তিশৃঙ্খলা ও ধীরস্থিরভাবে নামাজের জন্য আসবে, তাতে যে কয় রাকাত ইমামের সঙ্গে পাবে পড়ে নেবে, আর যা ছুটে যায় তা ইমামের নামাজের পর পুরা করে নেবে।” [বোখারি শরীফ :৩৮৭ ]

নামাজের জামাত শুরু হওয়ার পর স্থিতিশীলভাবে জামাতে শরীক হতে হবে। যেই গতিতে মুসল্লি জামাতের দিকে এসেছিলেন ঠিক সেভাবেই আসবেন। তার গতি বাড়ানো বা কমানোর কোন প্রয়োজন নেই। আর দৌড়াদৌড়িতো অনেক দূরের বিষয়। শরয়ী ওজরের জন্য জামাতের রাকা'য়াত ছুটে গেলে বা জামাত মিস হয়ে গেলেও একজন মুসল্লি ঠিক জামাতে নামাজ আদায়ের অনুরুপ সওয়াব পাবে। কেননা রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “সকল আ'মলই তার নিয়তের উপর নির্ভরশীল।” [সহিহ বুখারি : ৫২]


প্রশান্তময় শ্রেষ্ঠ ইবাদাত সালাত আদায়ের ক্ষেত্রে খুশু ও খুজু খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর জামাতে তাড়াহুড়া বা দৌড়াদৌড়ি করার মাধ্যমে অংশগ্রহণের ফলে পূর্ণ খুশু-খুজু পাওয়া যায়না। তাই তাড়াহুড়া করে জামাতে অংশগ্রহণ পরিপূর্ণভাবে নিষেধ করা হয়েছে।

নামাজে পুরুষের মাজা এবং মহিলাদের চুল দৃশ্যমান হওয়া!

অনেক পুরুষই খাটো শার্ট ব গেঞ্জি পরিধান করে নামাজ আদায়ে অভ্যস্ত। যার ফলে! সিজদাহ ও রুকুর সময় প্যান্ট নিচে নেমে গিয়ে এবং শার্ট বা গেঞ্জি উপরে উঠার মাধ্যমে মাজার (কোমর) বৃহৎ অংশ দৃশ্যমান হয়ে যায়। যার ফলাফল কিন্তু অনেক মারাত্মক। পরিপূর্ণ সতর না ঢাকার কারণে নামাজই নষ্ট হয়ে যায়। 

পুরুষের সতর হচ্ছে নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত।  হযরত আবূ সাঈদ খুদরী (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেছেন যে,  “পুরুষের সতর হল নাভি থেকে নিয়ে হাটু পর্যন্ত।” [মুসনাদুশ শামীন-১৪]

আর নামাজে সতর ঢাকা ফরজ। সুতরাং, যখন কারো সতর নামাজের মধ্যে বের হয়ে যায় এবং তিন তাসবীহ  পরিমাণ সময়ে (সুবহানা রাব্বিয়াল আ’লা তিন বার পাঠ করা যায় এতক্ষণ সময়) তা দৃশ্যমান থাকলে তার নামাজ হবেনা। [রদ্দুল মুহতার ১/৩৭৯, তাবয়ীনুল হাক্বায়েক্ব ১/৯৭]

মহিলাদের ক্ষেত্রে নামাজের মধ্যে চুল বের হয়ে যাওয়া প্রচলিত ভয়ংকর একটি ভুল। মহিলাদের চুলও সতরের অংশে। একটি চুলের এক-চতুর্থাংশ বা ততোধিক  দৃশ্যমান হলে নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে।  [তাবয়ীনুল হাক্বায়েক্ব ১/৯৭]

লেখা: শেখ মুযযাম্মিল হুসাইন শুভ

বয়সের দোষ না অজ্ঞতা? ইসলামিক ছোট স্টোরি বাংলা

Post a Comment

কমেন্টে স্প্যাম লিংক দেওয়া থেকে বিরত থাকুন

Previous Post Next Post