নকল এবং আসল ডিম কোন টি কিভাবে বুঝবেন? ইনজেকশন দিয়ে তৈরি হচ্ছে নকল ডিম
Photo: Shutterstock/iva
মার্কেটে পাওয়া যাচ্ছে আজকাল নকল ডিম। আসল থেকে নকল ডিমের বিক্রি বেশি হয় কেন?
নকল এবং আসল ডিম কোন টি কিভাবে বুঝবেন? ইনজেকশন দিয়ে তৈরি হচ্ছে নকল ডিম


মার্কেটে পাওয়া যাচ্ছে আজকাল নকল ডিম। আসল থেকে নকল ডিমের বিক্রি বেশি হয় কেন? এগুলো দেখতেও সুন্দর এবং খেতেও ভালো। আপনি কি করে বুঝবেন এটা নকল না আসল সেটাই হচ্ছে সবথেকে বড় প্রশ্ন!

প্রিয় পাঠক ভারতের মার্কেটে যতগুলো ডিম তার মধ্যে ৯০% নাকি চাইনিজ দের নকল ডিম। এরকম একটি তথ্য যখন ছড়িয়ে পড়েছিল তখন মানুষ ভয়ে ডিম কেনা ছেড়ে দিয়েছিল। তারপর সরকারের ফুড কর্পোরেশন মার্কেটে গিয়ে তল্লাশি চালায় এবং আশ্চর্যজনক ভাবে যদিও ৯০% নকল ডিম বের করতে পারে না কিন্তু উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নকল ডিম তারা উদ্ধার করে। এমনকি অনেক দোকানদাররা নিজেও বুঝতে পারে নি যে, সে নকল ডিম বিক্রি করছে। তাহলে একবার ভাবুন আমরা কি করে বুঝবো। তো প্রিয় পাঠক আসুন জেনে নেই কি করে চিনবেন এটাকে নকল ডিম না কি আসল ডিম।

প্রথমে বলে রাখি যখন সত্যিকারের আসল ডিম আপনি ভাঙবেন তখন সাদা আর হলুদ অংশ থাকবে আলাদা আলাদা লেয়ারে। কোনোভাবে একটার সাথে আরেকটা মিশে যাবে না। দুইটা স্তর একদম আলাদা থাকবে এবং লাল কুসুমটা একটা স্বচ্ছ আবরণের দ্বারা আবদ্ধ থাকবে। যতক্ষণ পর্যন্ত না আপনি হাত দিয়ে এটাকে ভালো করে মিক্স করছেন নিজে থেকে মিক্স হবে না। কিন্তু নকল ডিম আপনি ভাঙার পর সাথে সাথে সাদা আর হলুদ কুসুম যেন ঘোলাটে হয়ে একাকার হয়ে যাচ্ছে। 

অর্থাৎ দুটো একসাথে নিজে থেকে মিক্স হয়ে যাচ্ছে আপনাকে হাত দিয়ে মিক্স করতে হচ্ছে না। এছাড়াও আসল ডিম যখন আপনি বাইরে থেকে টাচ করবেন তখন বাইরের অংশটি হয় একটু রাফ অর্থাৎ খসখসে কিন্তু নকল ডিম সেটি দেখতে হয় সুন্দর চকচকে এবং গায়ে হাত দিলে স্মুথ লাগে অর্থাৎ মুলায়েম মনে হয় সেটাই হচ্ছে আসল তফাৎ। শুধু তাই নয় আরও একটি পরিবর্তন রয়েছে সেটি হলো গন্ধ। আসল ডিম যখন আপনি ভাজবেন অথবা রান্না করবেন তখন দেখবেন কেমন যেন একটা গন্ধ বের হয় ডিমের এই গন্ধটা সম্পূর্ণ ঘর ছড়িয়ে যায় কিন্তু নকল ডিমে গন্ধ নেই বললেই চলে। হালকা কিছু গন্ধ থাকতে পারে কিন্তু ডিমের মতো কোনো গন্ধ বের হবে না।

তো প্রিয় পাঠক এই ডিম গুলো যেগুলো নকল ডিম সেগুলো প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি হয়ে থাকে। এমনটা ধারণা করা হয়েছিল কিন্তু গবেষণা করে জানা গেল নকল ডিমের সাদা অংশটা তৈরি হয় সোডিয়াম এনজিলেট এবং খাওয়ার ক্যালসিয়ামের মিশ্রনের ফলে। শুধু তাই নয় পানি খাওয়ার যে রং সেটিও তৈরি করা হয়। হালকা কুসুম গরম পানিতে এই সোডিয়াম এনজিলেট সেটাকে ভালো করে মিশিয়ে ডিমের আকৃতি দেওয়া হয় তারপর ডিমের সাদা অংশটা বানানো হয় বিবিন্য কেমিক্যাল থেকে - ডিমের কুসুমটাকেও পারফেক্ট শেপ দেওয়ার জন্য কয়েকটি কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়। এমনকি তাদের কাছে ডিমের ছাঁচ পর্যন্ত আছে। 

নকল এবং আসল ডিম কোন টি কিভাবে বুঝবেন? ইনজেকশন দিয়ে তৈরি হচ্ছে নকল ডিম
Photo pexels polina tankilevitch

সেই ছাঁচে ফেলে ডিমের পারফেক্ট আকৃতি তৈরি করে অর্থাৎ সম্পূর্ণ কেমিক্যাল দিয়ে একটি ডিম তৈরি করা হয়। এবং দূর থেকে আপনি এই ডিম দেখে বুঝতেই পারবেন না যে এটা আসল নাকি নকল। তবে এটা নিশ্চিত এই ডিম খেলে ক্যান্সার আপনার শরীরে‌ সৃষ্টি হবেই... প্রিয় পাঠক আমি সর্বশেষ আরেকটি পার্থক্য বলে দেই নকল ডিমের সেটি হচ্ছে এর রং অর্থাৎ কালার। আসল ডিম যখনই মাঝখান দিয়ে কাটবেন তখন দেখবেন কুসুমটা একটু সাদাটে টাইপের হয়ে যায় কিন্তু নকল ডিম যখন মাঝখান দিয়ে কাটবেন দেখবেন কুসুমটা হলুদ কালারের হয়ে থাকে অর্থাৎ গাঢ় হলুদ রঙের হয়। 

কাঁচা হলুদ খেলে যেমন কালার বের হয় ঠিক তেমন। শুধু তাই নয় ডিমের উপরের যে খোলস রয়েছে নকল ডিমের খোলস আগুনে জ্বালিয়ে লাগিয়ে দিলে দেখবেন প্লাস্টিকের মতো গলে যাবে। এমনকি কালো ধোঁয়ার সৃষ্টি হবে। কিন্তু আসল ডিমের যদি আপনি আগুন দিয়ে হিট দেন সহসারিতে পুড়বে না। ডিমের কুসুম বের করে যদি পোড়াতে চান তাহলে পুড়ে ছাই হবে কিন্তু গলে যাবে না। তো আজকের এই টিপসগুলো দ্বারা আপনি অনায়াসে নকল এবং আসল ডিম পরীক্ষা করে নিতে পারবেন। তবে এটা নিশ্চিত যে বাংলাদেশের বাজারে নকল ডিম নাই বললেই চলে। 

তবে ভারতের বন্ধুরা সাবধান‌ কারণ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নকল ডিম রয়েছে।কারন ভারতের বাজারে মাঝে মাঝে নকল ডিম খুঁজে পাওয়া যায়। 

সূত্র: আলোর পথ Multimedia

Post a Comment

কমেন্টে স্প্যাম লিংক দেওয়া থেকে বিরত থাকুন

Previous Post Next Post