কবুতরকে কেনো শয়তান বলেছেন হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ)?
কবুতরকে কেনো শয়তান বলেছেন হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ)?


কবুতরকে কেনো শয়তান বলেছেন মহানবী সাঃ?

মহানবী সাঃ কবুতরকে কেনো শয়তান বলেছেন? আবু দাঊদ শরীফ ৪৯৪০। নম্বর হাদীসে মহানবী সাঃ একটা বিশেষ প্রেক্ষাপটে কবুতরকে শয়*তান হিসেবে উল্লেখ্য করেছেন। কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না ঠিক কি কারনে আল্লাহর রাসূল সাঃ ঠিক কি কারণে কবুতর কে শয়তান বলেছিলেন । 

কবুতর অত্যান্ত আকর্ষণীয় ও সুন্দর একটা পাখি।যা সকলের ই পছন্দ যার ফলে এই পাখি অধিকাংশ ঘরেই পালিত হয়। ঘর ছাড়াও এই পাখিটি বিভিন্ন মাজার ও এমনকি মক্কা মদীনায় ও প্রচুর পরিমাণে দেখা যায়। তবে মক্কা মদীনায় মানুষ কবুতর কে খাবার দেয় তাই দিন দিন সেখানে কবুতর এর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রিয় দর্শক পাঠক লেখার মূল বিষয় বর্ণনা করার আগে আপনাদের একটা ঘটনা জানাতে চায় । কবুতর এর ব্যাপারে হযরত নুহ আঃ প্লাবন এর সময় যোদি পাহাড়ে নৌকা থামার পর হযরত নূহ আলাইহিস সাল্লাম ও পৃথিবীতে বেঁচে থাকা জাতির একাংশ ভুমি তে বাসবাস  করার প্রস্তুতি নিলেন। আস পাসের অবস্থা জানার জন্যে নুহ আঃ একটি কাক কে পাঠালেন অতঃপর কাক টি উড়ে গিয়ে একটি ক্ষেতের সন্ধান পেল আর ফিরে এলেও না। 

কাক আসতে দেরি হচ্ছে দেখে নুহ আঃ এক কবুতর পাঠালেন  অবস্থা দেখে আসার জন্যে যে এখন পৃথিবীতে বাস করা যাবে কি না ? মহাপ্লাবন শেষ হয়েছে কি না অতঃপর সে কবুতর উড়ে গেলো এবং  ফিরে এলো ঠোঁটে করে এক জলপাইয়ের পাতা নিয়ে । কবুতর এর পায়ে কাদা লেগে আসে দেখে হযরত নুহ আঃ এবং পৃথিবীতে থাকা অবশিষ্ট থাকা লোকেরা বুঝতে পারলেন পৃথিবী এখন বসবাসের উপযোগী হয়েছে। 

কবুতরের এই কাজের জন্যে হযরত নুহ আঃ কবুতর এর জন্যে দুআ করেছিলেন ফলে কবুতর সহজেই মানুষের সাথে পোষ মানা একটা প্রাণী হয়ে গেলো এছাড়াও কবুর একটি শান্তি প্রিয় প্রাণী - নুহ আঃ দায়িত্ব হীনতার কারণে কাকের উপর অসন্তুষ্ট হলেন এবং বদ দুআ দিলেন ফলে কাক মানুষ কে বেশি ভয় পায়।  সুনানে ইবনে মাজাহ এর ২৯৪৭ নং হাদিসে  সাইবার কন্যা সাদি রাঃ হতে বর্ণিত তিনি বলেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা বিজয়ের বছর যখন নিশ্চিত নিরাপদ হলেন তখন তিনি উটে আরোহণ করে বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করেন। 

এবং নিজের হাতের লাঠির সাহায্যে সোজা হয়ে হাজারে আসওয়াদ কে চুমু দেন এবং এর পর তিনি কাবার অভ্যন্তরে প্রবেশ করেন এবং দেখতে পান একটি কাঠের তৈরি কবুতর অতঃপর তিনি টা ভেঙে ফেলেন । তার পর তিনি কাবার দরোজায় দাড়িয়ে তা বাইরে নিক্ষেপ করেন এবং সাফিয়া বলেন আমি নিজে তা দেখেছিলাম। সুতরাং বুঝা যায় কবুতর এর মূর্তি যদিও সেটা কাঠের বা মাটির হোক সেটা ঘরে রাখা যাবে না । যেকোনো প্রাণীর মূর্তি ই ইসলাম সমর্থন করে না সেটা কবুতর হোক বা যায় হোক কোনো প্রাণীর মূর্তি রাখলে ফেরেশতা রা ঘরে প্রবেশ করেন না এমনকি যেকোনো প্রাণীর ছবি রাখাও নাজায়েজ। bengali domestic pigeon story

যেহেতু কবুতর পোষ মানে এতে অনেক মানুষ এই কবুতর লালন পালন করে এতে কোনো বাধা নেই শরীয়তে। অধিকাংশ আলেমের মতে কবুতর পালন করা এর মাংস ভক্ষণ করা সম্পূর্ণ জায়েজ। কিন্তু আবু দাউদ শরীফের ৪৯৪০ নাম্বার হাদীসে রাসূল সাঃ এক ব্যাক্তিকে কবুতর এর পিছনে দৌড়াতে দেখলেন এবং এই খেলায় মগ্ন হয়ে নামাজের ব্যাপারে তাকে উদাসীন হতে দেখলেন । তখন রাসূল সাঃ বললেন এক শয়তান আরেক শয়তানের পিছনে ছুটছে। অর্থাৎ কবুতরের পিছনে যে ছুটছে সেও শয়তানের প্ররোচনায় প্ররোচিত হচ্ছে । 

এই হাদীস টিতে রাসূল সাঃ এর বক্তব্য অনুযায়ী কবুতর কেও শয়তান বলা হয়েছে ওই বিশেষ প্রেক্ষাপটে । এই হাদীস টি শুনে যারা কবুতর লালন পালন করেন তাদের মন খারাপ হওয়ার কোনো কারণ নেই। এই হাদীসে দিয়ে শুধুমাত্র কবুতর দিয়ে খেল তামাশায় লিপ্ত হওয়া কে শয়তানি কর্মকাণ্ড বলা হয়েছে। কিন্তু আপনি যদি কবুতর পালন করে অর্থনৈতিক লাভবান হতে চান বা মাংস খেতে চান তাহলে বাধা নেয় শুধু কবুতর এর পিছনে আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট করে নামাজ কালাম যিকর আজগার ভুলে যাওয়া যাবে না 

এছাড়াও কবুতর এর মাধ্যমে জুয়া লটারি ইত্যাদি হারাম কার্যক্রম পরিচালিত হতো তৎকালীন আইয়ামে জাহেলয়াতের যুগে । তাই রাসূল সাঃ তৎকালীন সময়ে মানুষ যারা কবুতর নিয়ে এই জাতীয় লটারি এবং জুয়া খেলত তাদের ওই কর্মকাণ্ড কে শয়তানি কর্মকাণ্ড বলেছেন। আল্লাহ আমাদের সহীহ বুঝ দান করুক । আমিন - সূত্র: আলোর পথ Multimedia

Post a Comment

কমেন্টে স্প্যাম লিংক দেওয়া থেকে বিরত থাকুন

Previous Post Next Post